ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

টেকনাফে সামাজিক বাগানের প্লট বিক্রি!

টেকনাফ প্রতিনিধি :::
টেকনাফে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে সৃজিত সামাজিক বাগানের ভেতরে প্লট বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। বনবিটের অসাধু কর্মচারী এবং সামাজিক বাগানের অংশীদাররা মিলেমিশে উক্ত প্লটে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দোকান নির্মাণের সুযোগ করে দিচ্ছেন। স্থানীয় পরিবেশবাদীরা আশংকা করছেন, বিশাল আয়তনের সামাজিক বাগানটি উজাড় হলে এখানকার জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়বে।
অংশীদার এবং স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানাযায়,টেকনাফ রেঞ্জের হ্নীলা মোচনী বিটের লেদায় ২০০৩-২০০৪ সনে ৫০একরের সৃজিত সামাজিক বাগানে প্লটের মাধ্যমে ইতিমধ্যে ৭০-৮০টিরও বেশী দোকান-পাট নির্মাণ করা হয়েছে। বন মালী এবং বাগানের কিছু অসাধু অংশীদার এই প্লট বিক্রিতে সরাসরি জড়িত বলে লোকজন জানিয়েছেন। টাকার বিনিময়ে প্রতিনিয়ত বনের ভেতরে দোকান তৈরী করছেন অংশীদাররা। অভিযোগ রয়েছে,সামাজিক বাগানের অংশীদার এবং বিটের কিছু কর্মচারী দৈনিক এবং মাসিকহারে টাকা আদায়ের শর্তে দোকানগুলি বসিয়েছেন। বনবিভাগ সুত্র জানায়, মোচনী বিটের লেদার বনাঞ্চলটি পশু-পাখির অভয়াণ্য। উক্ত বনাঞ্চলটি পশু-পাখির খাদ্য উৎপাদনের অন্যতম স্থান। বাগানের অংশীদার পশ্চিম লেদা এলাকার মৃত হায়দর আলীর পুত্র জামাল হোসন জানান,স্থানীয় কম্বুল হোসনের পুত্র কালু সামাজিক বাগানে ৭০/৮০টি দোকান বসিয়েছেন। আর বনে বসানো প্রতি দোকান থেকে আদায়কৃত দৈনিক এবং মাসিক টাকা বনবিভাগের লোকজন এবং অংশীদাররা ভাগ বাটোয়ারা করেন। আবার ঐ টাকার কিছু অংশ পাহারাদারদের বেতন হিসেবে দেওয়া হয় বলে এই অংশীদার জানান। এদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বি ব্লকের নুর বশর,সুলতান,এহেছান উল্লাহ,আয়ুব,এ ব্লকের মো: আলম,সি ব্লকের জুহুর আলম,সলিম,এফ ব্লকের আয়ুব,ইয়াছিন,স্থানীয় মীর কাশেম,নবী হোছাইন,মঞ্জুর,মোঃ ইসলাম প্রকাশ কালুসহ প্রায় ৭০/৮০টি দোকান-পাট সামাজিক বাগানের ভেতরে নির্মাণ করেছেন। স্থানীয় এলাকাবাসী ও প্রকৃতি প্রেমী সচেতন মহল,জরুরী ভিত্তিতে বিশাল একরের সামাজিক বাগান সংরক্ষণে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। কিছু কিছু অংশীদারের যোগসাজশে বলপূর্বক বাগানে দোকান বসানোর কথা স্বীকার করে বাগান সভাপতি মোস্তাক আহমদ সওদাগর জানান,আমি এসব কার্যকলাপে একেবারেই অসন্তুষ্ট। বাগানো বসানো দোকান উচ্ছেদের পক্ষে মতামত ব্যক্ত করে সবকিছুই স্বীকার করে নিয়ে নিজের অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে তিনি আরো বলেন,পদ থেকে ইস্তফা নিতে অনেক আগেই দরখাস্ত দিয়েছি। এখানে আমার করার কিছুই নেই। সহকারী বন সংরক্ষক(এসিএফ) মো: সরওয়ার আলম জানান,আমিতো আসলে আগে শুনেনি কেবল আপনার কাছ থেকেই শুনলাম। বন সংরক্ষণে দোকানগুলি উচ্ছেদের পাশাপাশি জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা(কক্সবাজার দক্ষিণ) মো: আলী কবীর জানান,মুচনী বিটের উক্ত এলাকাটি বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য। বাগানে দোকান-পাট নির্মিত হলে বন উজাড় হয়ে যাবে। বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে জানিয়ে তিনি আরো বলেন,সামাজিক বাগানের দোকান উচ্ছেদ করা হবে। জড়িত বাগানের অংশীদার এবং দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: